পিকি ইটিং (Picky Eating)

যখন কোনো শিশু খাবারের ব্যাপারে অতিরিক্ত বেছে খায়, অনেক খাবার খেতে চায় না, বা একঘেয়ে কিছু নির্দিষ্ট খাবারই শুধু খেতে চায় তখন সেটাকে পিকি ইটিং বলে।
এতে সাধারণত দেখা যায়—
- নতুন খাবার খেতে অনীহা
- নির্দিষ্ট কিছু খাবারই বারবার খেতে চাওয়া
- শাকসবজি, ফল, বা প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলা
- খাবারের পরিমাণ খুবই কম খাওয়া
- খাবারের রঙ, আকার বা টেক্সচার নিয়ে অতিরিক্ত খুঁতখুঁত করা
এটা সাধারণত ২–৬ বছর বয়সে বেশি দেখা যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই সমস্যা কমে যায়। তবে দীর্ঘদিন চলতে থাকলে ওজন না বাড়া, পুষ্টিহীনতা বা খাবার নিয়ে স্ট্রেস তৈরি হতে পারে।
পিকি ইটিং কি শুধু বাংলাদেশেই বেশি দেখা যায়?
পিকি ইটিং শুধু বাংলাদেশে বেশি এমনটা নয়, বিদেশেও প্রচুর আছে।গবেষণা অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী ১৪–৫০% শিশু কোনো না কোনো পর্যায়ে picky eater হয়। UK, USA, ইউরোপের স্টাডি বলছে ২–৪ বছরের বাচ্চাদের মধ্যে প্রায় ২৫–৪০% picky eating দেখা যায়। আমাদের দেশে এই সংখ্যা সঠিকভাবে গবেষণায় প্রকাশ হয়নি, কিন্তু শহরে বেশি চোখে পড়ে।
কেন বাংলাদেশে শহরে পিকি ইটিং এর হার বেশি:
১. ফ্যামিলি স্ট্রাকচার: শহরে অনেকেই নিউক্লিয়ার ফ্যামিলিতে থাকে। দাদা-দাদি/নানা-নানির সাপোর্ট কম। ফলে শিশুর খাবারের প্রতি নজরদারি কম হয়।
২. ফিডিং এর ধরণ: বিদেশে বাচ্চারা ছোট থেকে ভ্যারাইটির খাবারের সঙ্গে পরিচিত হয়, আর খাওয়ানোর প্রেশার কম থাকে। আমাদের দেশে মা-বাবারা জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করেন, ফলে বাচ্চাদের মধ্যে খাবার নিয়ে নেগেটিভ অ্যাসোসিয়েশন তৈরি হয়।
৩. প্যারেন্টিং প্রেশার: বিদেশে মায়েরা চাকরি করলেও ওদের কাছে সু-সংগঠিত ডে-কেয়ার, প্রশিক্ষিত কেয়ারগিভার থাকে। ফলে শিশু ছোটবেলা থেকেই গ্রুপে বসে খাওয়া শেখে। কিন্তু আমাদের দেশে চাকরিজীবী মায়েরা অনেক বেশি প্রেশারে থাকে এবং ট্রেইনড ডে-কেয়ার সুবিধা তুলনামূলকভাবে কম। তাই খাবারের রুটিন গড়ে ওঠে না।
৪. খাবারের ভিন্নতা কম: BLW (Baby LED Weaning) বা variety exposure না থাকায় নতুন খাবারে আগ্রহ কম দেখা যায়।
৫. সাংস্কৃতিক অভ্যাস: পরিবারের সবাই মিলে একই খাবার না খেয়ে, আলাদা রান্না করে খাওয়ানো এবং বাচ্চাকে আলাদা সময় খাওয়ানোর অভ্যাস।
৬. অনেক অভিভাবকের চিন্তায় সমস্যা: আমাদের দেশে বাচ্চা যদি একটু কম খায়, সাথে সাথেই “খায় না” বলা হয়।
পিকি ইটিং শুধু বাংলাদেশে বেশি এমনটা নয়, বিদেশেও প্রচুর আছে।গবেষণা অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী ১৪–৫০% শিশু কোনো না কোনো পর্যায়ে picky eater হয়। UK, USA, ইউরোপের স্টাডি বলছে ২–৪ বছরের বাচ্চাদের মধ্যে প্রায় ২৫–৪০% picky eating দেখা যায়। আমাদের দেশে এই সংখ্যা সঠিকভাবে গবেষণায় প্রকাশ হয়নি, কিন্তু শহরে বেশি চোখে পড়ে।
কেন বাংলাদেশে শহরে পিকি ইটিং এর হার বেশি:
১. ফ্যামিলি স্ট্রাকচার: শহরে অনেকেই নিউক্লিয়ার ফ্যামিলিতে থাকে। দাদা-দাদি/নানা-নানির সাপোর্ট কম। ফলে শিশুর খাবারের প্রতি নজরদারি কম হয়।
২. ফিডিং এর ধরণ: বিদেশে বাচ্চারা ছোট থেকে ভ্যারাইটির খাবারের সঙ্গে পরিচিত হয়, আর খাওয়ানোর প্রেশার কম থাকে। আমাদের দেশে মা-বাবারা জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করেন, ফলে বাচ্চাদের মধ্যে খাবার নিয়ে নেগেটিভ অ্যাসোসিয়েশন তৈরি হয়।
৩. প্যারেন্টিং প্রেশার: বিদেশে মায়েরা চাকরি করলেও ওদের কাছে সু-সংগঠিত ডে-কেয়ার, প্রশিক্ষিত কেয়ারগিভার থাকে। ফলে শিশু ছোটবেলা থেকেই গ্রুপে বসে খাওয়া শেখে। কিন্তু আমাদের দেশে চাকরিজীবী মায়েরা অনেক বেশি প্রেশারে থাকে এবং ট্রেইনড ডে-কেয়ার সুবিধা তুলনামূলকভাবে কম। তাই খাবারের রুটিন গড়ে ওঠে না।
৪. খাবারের ভিন্নতা কম: BLW (Baby LED Weaning) বা variety exposure না থাকায় নতুন খাবারে আগ্রহ কম দেখা যায়।
৫. সাংস্কৃতিক অভ্যাস: পরিবারের সবাই মিলে একই খাবার না খেয়ে, আলাদা রান্না করে খাওয়ানো এবং বাচ্চাকে আলাদা সময় খাওয়ানোর অভ্যাস।
৬. অনেক অভিভাবকের চিন্তায় সমস্যা: আমাদের দেশে বাচ্চা যদি একটু কম খায়, সাথে সাথেই “খায় না” বলা হয়।
৭। কৃমি ও রক্তস্বল্পতাঃ আমাদের দেশে কৃমির সমস্যা ও রক্তস্বল্পতার হার বিদেশের তুলনায় অনেক বেশি। এছাড়া আমাদের দেশে ইনফেকটিভ রোগ ব্যাধিও তুলনামুলক বেশি। ফলে বাচ্চাদের খাবারের অভ্যাস গড়ে উঠার সময় কৃমির সমস্যা / রক্ত স্বল্পতা হলে বা বার বার রোগাক্রান্ত হলে সঠিক ভাবে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে উঠে না।
গ্রামে কেন কম দেখা যায়: গ্রামে বাচ্চারা বেশি বাইরে খেলে তাই ডিমান্ড বেশি, একসাথে খায়, কম পায়, তাই ওদের মধ্যে picky eating তুলনামূলকভাবে কম দেখা যায়। শহরে স্ক্রিন-টাইম, ফাস্টফুড এক্সপোজার, একা খাওয়া—এসব কারণে picky eating বাড়ে।
ডাঃ আদনান আল বিরুনী
এমবিবিএস, এমএস (শিশু সার্জারী)
এসসিএইচপি (শিশু রোগ – অস্ট্রেলিয়া)
শিশু সার্জন ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ।
Share via: