চিকুনগুনিয়া: উপসর্গ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
চিকুনগুনিয়া Chikungunya virus দ্বারা সংঘটিত হয় যেটি প্রধানত Aedes aegypti এবং Aedes albopictus নামক মশার কামড়ে হয়ে থাকে।
কিভাবে ছড়ায়:
- মুখ্য বাহক: Aedes মশা (সাধারণত দিনে কামড়ায়, বিশেষত সকাল ও বিকেলে)
- সংক্রমিত ব্যক্তি যখন জ্বরে থাকে, তখন তাকে কামড়ানো মশা অন্য ব্যক্তিকে কামড় দিলে সংক্রমণ ছড়ায়
- মানুষই এর প্রধান হোস্ট; পশুর মাধ্যমে সংক্রমণ হয় না
উপসর্গসমূহ
চিকুনগুনিয়ার উপসর্গ সাধারণত সংক্রমণের ২–৭ দিন পর শুরু হয়।
সাধারণ উপসর্গ:
- হঠাৎ তীব্র জ্বর
– ১০২–১০৪°F
– সাধারণত ২-৩ দিনে জ্বর কমে যায়
- মাংসপেশির ব্যথা
– হাত, পা, কবজি, হাঁটু ও গোড়ালিতে বেশি হয়
– ব্যথা এত তীব্র হয় যে রোগী হাঁটতেও কষ্ট পায়
– ব্যথা ১–৩ সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে
- জয়েন্ট ফুলে যাওয়া
– বিশেষ করে কবজি, গোড়ালি, হাঁটু
- র্যাশ
– অনেক রোগীর শরীরে গোলাপি বা লালচে ফুসকুড়ি হয়
– মুখ, হাত, পা, পিঠে দেখা দিতে পারে
- মাথা ব্যথা, চোখে ব্যথা
- চোখ লাল হওয়া বা চোখ উঠা
- বমি বমি ভাব বা বমি, খাবারে অত্যাধিক অরুচি
- চোখে আলো সহ্য না হওয়া
- চরম দুর্বলতা – জ্বর কমে যায় কিন্তু চূর্বলতা রয়ে যায়।
কম সাধারণ উপসর্গ:
- হালকা কাশি
- পেট ব্যথা
- পাতলা পায়খানা
- স্নায়বিক জটিলতা (খুব কম ক্ষেত্রে)
শিশুদের ক্ষেত্রে খিঁচুনি, খাওয়ায় সমস্যা
ডায়াগনসিস এর জন্য পরীক্ষা
- Complete Blood Count (CBC):
– হালকা লিউকোপেনিয়া, প্লেটলেট সাধারণত স্বাভাবিক - ESR/CRP: কিছুটা বাড়তে পারে
- Chikungunya IgM Antibody (ELISA):
– জ্বর শুরুর ৪–৫ দিন পর থেকে IgM পজিটিভ হয় - RT-PCR (Early diagnosis):
– জ্বরের ১ম–৫ম দিনে করা হলে ভাইরাসের RNA পাওয়া যায়
প্রতিরোধ ব্যবস্থা
মশা নিয়ন্ত্রণ:
- জমে থাকা পানিতে মশার জন্ম না হওয়া নিশ্চিত করা
- সপ্তাহে অন্তত একবার ফুলের টব, কুলার, টায়ার ইত্যাদি পরিষ্কার করা
ব্যক্তিগত সুরক্ষা:
- ফুলহাতা কাপড় পরা
- দিনে ও রাতে মশারি/মসকিউটো রিপেলেন্ট ব্যবহার
- মশার কয়েল বা লিকুইড ব্যবহার
- শিশুর বেডে মশারি নিশ্চিত করা
চিকিৎসা
চিকুনগুনিয়ার নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল ঔষধ নেই। সুতরাং মূলত সাপোর্টিভ চিকিৎসা দেয়া হয়।
- প্যারাসিটামলঃ ডোজ আর্টিকেলে দেয়া আছে। বেশি জ্বর হলে সাপজিটরী ব্যবহার করতে হবে।
- প্রচুর পানি ও তরল খাওয়াতে হবে
- ৭ দিন সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে
- ব্যাথার ঔষধঃ পরীক্ষা করে ডেংগু বাদ দেয়া গেলে ব্যাথার ঔষধ ব্যবহার করা যায়।
- হাসপাতালে ভর্তিঃ বাচ্চা অনেক দূর্বল / নিস্তেজ হয়ে গেলে, পানি শূন্যতা দেখা দিলে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে। কিছু বাচ্চার ১-২ দিন অত্যাধিক জ্বর (১০৪-১০৫) থাকতে পারে যেটা প্যারাসিটামল মুখে খেয়ে বা সাপজিটর দিয়ে যদি না কমে তবে সেক্ষেত্রেও হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে।
সতর্কতা (Disclaimer):
- আর্টিকেলটি শিক্ষামূলক ও সচেতনতামূলক উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।
- সঠিক মূল্যায়ন ও চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক।
© Dr-Adnan Al Berunie
MBBS, MS (Pediatric Surgery)
SCHP (Paediatrics) Australia, CCD
Child Specialist & Pediatric Surgeon
চেম্বার ১:
আল-মারকাজুল ইসলামী হাসপাতাল
২১/১৭, বাবর রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা। রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতি — বিকেল ৬:০০–৮:০০
সিরিয়ালের জন্য: 01755515556
চেম্বার ২:
ইউনিএইড ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন
2-A/1, দারুস সালাম রোড, মিরপুর-১। শনি, সোম ও বুধ — সন্ধ্যা ৭:৩০–৯:৩০
সিরিয়ালের জন্য: 01333702755
অনলাইন কনসালটেশন: 01671652589 (Whatsapp)
Share via:
